Skip to main content

Posts

Showing posts from April, 2017

শিয়ালদা স্টেশনে আইনস্টাইন সাহেব

সেদিন সন্ধ্যাবেলার অফিস টাইমে শিয়ালদা স্টেশনে আইনস্টাইন সাহেবের সাথে দেখা হয়ে গেল | সেই ভাবুক উস্কোখুস্কো চেহারা , মাথায় একগোছা সাদা চুল এলোমেলো , মুখে সেই পরিচিত হাসি | আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম বনগাঁ লোকাল ধরব বলে | শুক্রবার , বেজায় গরম | হঠাৎ কানের কাছে কে যেন ইংরাজিতে বলে উঠল , " বলেছিলাম না , সবই আপেক্ষিক ? এই গরমে ভিড়ের মধ্যে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করার সময়টা এতই দুঃসহ যে সামান্য এক মিনিটকে যেন এক ঘন্টা বলে মনে হয় | আবার এই যে উইকএন্ড পাবে শনি-রবি , সব মিলিয়ে আটচল্লিশ ঘন্টা , সেই পরম সুখকর সময়কে যেন মনে হবে কয়েক সেকেন্ড - মুহূর্তের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে !! " চমকে গিয়ে তাকিয়ে দেখি ওই নিদারুণ গরমে কোট গায়ে তিনি দিব্যি মিটিমিটি হাসছেন | আমি জিজ্ঞাসা করলাম (ইংরাজীতেই) , " আরে সাহেব ! এই অসময়ে , বেমানান এই জায়গায় আপনি কী করছেন ?" সাহেব হেসে বললেন , " তোমাকে একটা সুখের সন্ধান দিতে এসেছি | এই গরমে বনগাঁ লোকালে ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে দুর্গানগর অব্দি যেতে হবে বলে যে মেজাজ খারাপ করে রেখেছ তার কোনো মানেই হয় না | ব্যাপারটা অন্যরকম করে ভাবো | গেটের কাছে দাঁড়িয়...

নরেন্দ্রপুরের স্মৃতিকথা : পর্ব ১৩ : ইংরাজি-বিভ্রাট

প্রথম ভাগ : প্রায় আছে নরেন্দ্রপুর মিশনে তখন আমি ক্লাস টেনে পড়ি | একবার মান্থলি পরীক্ষার সিলেবাস দেখতে আমরা কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টে গিয়ে দেখি বাইরে নোটিস বোর্ডে লেখা লেখা আছে যে সিলেবাস হল - " All but 3 acids" | আমাদের মধ্যে কারোরই 'all but' এর অর্থ জানা ছিল না | এদিকে সেই মুহূর্তে ডিপার্টমেন্টে কোনো কেমিস্ট্রি স্যারও নেই যে তাঁকে জিজ্ঞাসা করব | খুবই দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে ক্লাসে ফিরে এলাম | ভাগ্যক্রমে পরের পিরিয়ডটাই ছিল ইংরাজি | শিক্ষক শ্রী রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জি ( RNC ) | আমরা তাঁকে পিছনে ‘রবিন চাঁড়াল’ ব লে ডাকতাম | স্যার এলে আমরা তাঁকে ব্যাপারটা খুলে বলে জিজ্ঞেস করলাম , " স্যার , সিলেবাসে তো এরকম লেখা আছে | আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না | আপনি বলে দিন ওই অ্যাসিড তিনটে আছে কি নেই " রবিনদা একটু থেমে বললেন , " বুঝলি তোরা , ব্যাপারটা হচ্ছে এই অ্যাসিডগুলো সিলেবাসে প্রায় আছে |" আমরা হতভম্ব ! সিলেবাসে কোনো জিনিস "প্রায় থাকা"র অর্থ কী হতে পারে ? আমরা স্যারের মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলাম | **************************...

পেপার কাটিং কবিতা

এটা কবিতা নয় , বরং বলা এটা একটা এক্সপেরিমেন্ট | আধুনিক কবিতা নিয়ে নানা কৌতুক শোনা যায় , এটা সেই বিষয়েই একটা পরীক্ষানিরীক্ষার প্রয়াস | আগে কবিতাটা পড়ে নিন, তারপর কবিতা সম্বন্ধে আলোচনা হবে | কবিতা : প্রশ্ন হয়েছিল , চলে যাওয়ার   আকাঙ্ক্ষা কোথায় ? ভালো হোক চলে যাওয়া | কাজ , টাকা , প্রেমিকের হাতে , দেহ আর নয় | আঠাশ বছরের বিশ্বাস | মোবাইলে বার বার বিরক্ত , সন্দেহ , উচ্ছিষ্ট দামী জীবনযাপন |   নিখোঁজ মানুষ , হইচই , সিমেন্ট গোলা , টিনের বাক্স , অগোছালো ঘর , সম্পর্কে চিড় | ( সমাপ্ত) আলোচনা : আমি যেটা এখানে লিখবার চেষ্টা করেছি সেটাকে ‘পেপার কাটিং কবিতা’ বলে | কোনো সংবাদপত্র বা বইয়ের যেকোনো একটা পাতা বেছে নিয়ে সেখান থেকে এলোমেলো ভাবে (random order) কিছু শব্দ তুলে নিয়ে সেটাকে পরপর সাজিয়ে কবিতার আকার দেওয়া | খুব স্বাভাবিকভাবেই এরকম কবিতার কোনো অর্থ নেই | কিন্তু আজকাল মানুষ কঠিন কবিতা দেখলেই ভাবে যে সেটা বুঝি বেশ উঁচুদরের জিনিস, ফলে মানুষ ‘পেপার কাটিং কবিতার’ও একটা মনগড়া ব্যাখ্যা খুঁজে বার করে এবং মনে করে যে কবি নিশ্চয়ই এমনটা ভেবেই কবিতাটির রচনা করেছেন | আজকের...