|| মহালয়া
ও আমি ||
আজ
মহালয়া শোনা হয়নি (দেখা বহু বছর আগেই ছেড়ে দিয়েছি), আসলে রাত চারটে অবধি সিনেমা দেখেছি |
তারপর বাড়িতে মহালয়ার গান লাউড স্পিকারে সেট
করে দিয়ে (অবশ্যই আমার ঘরের বাইরে) তোফা ঘুম দিয়েছি |
সকালে উঠলাম দশটায়,
উঠেই ভাবছি মহালয়া না শোনার জন্য বাঙালিত্ব
হারালাম কিনা !!! আদৌ এই বাঙালী সমাজ আমায় মেনে নেবে তো ??
ঘর থেকে বেরোবামাত্র জানতে পারলাম আজ আমার
ছোটমাসীরা আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসছে | রান্না ঘরে গিয়ে ঘুম চোখে মেনু পরিদর্শনে গেলাম,
যা বুঝলাম সেটা হল - ইলিশ মাছ ভাজা,
পমফ্রেট মাছের ঝাল,
চিংড়ির
মালাইকারী আর মুরগীর মাংস |
যাক
!! বাঙালিত্ব হারানোর আশংকা নেই | ভুরিভোজন (অবশ্যই আমিষ) করলে বাঙালীর সাত জন্মের পাপ ধুয়ে
যায় |
মাছ-মাংসে
প্রেম করে যেই জন,
সেই জন বাঙালী অবিনশ্বর !!
সেই জন বাঙালী অবিনশ্বর !!
© অর্ঘ্য দাস @ টুকটাক লেখালেখি , দুর্গানগর, 19-09-2017
==================================================================
|| দুর্গাপুজো
এবং আমি ||
দুর্গাপুজো মানে আমার কাছে চিরকালই 'পেটপুজো' | এবং সেটা আমিষ | খাদ্যে যাঁরা ধর্মীয় বাধানিষেধ আরোপ করতে চায় তাদের প্রতি
আমার আন্তরিক ধিক্কার চিরকালই |
মধ্যপ্রদেশে
কর্মসূত্রে বেশ কিছুদিন ছিলাম | সেখানে নবরাত্রি মানেই বিশুদ্ধ নিরামিষভোজন |
সেখানে অনেকেই আমাকে জিজ্ঞাসা করত যে আমরা
বাঙালিরা কী করে দুর্গাপুজোর মতো পবিত্র অনুষ্ঠানে মাছ-মাংস খাই !!! উত্তরে আমি
শুধু হাসতাম | খুব
গোঁড়া কাউকে পেলে এটাও বলতাম যে আমি গো-মাংস ভক্ষণ করেছি |
ব্যস, তারা আর কথা বাড়াত না |
পুজোতে
আমি উপোসও করি না | আমাদের স্কুলের এক প্রবাদপ্রতিম শিক্ষক আমাদের একটা কথা বলতেন যেটা আমার
সারাজীবন মনে থাকবে | উনি বলতেন, “এমন
কি কখনোও হতে পারে যে তুই সারাদিন উপোস করার পর এক থালা খাবার সাজিয়ে তোর মায়ের
সামনে রাখছিস, আর
তোর মা অভুক্ত ছেলের সামনে বসে ওই খাবার খাচ্ছেন ?”
ফলে
সত্যিই যদি দেবী দুর্গা মা হন আমাদের, তাহলে তিনি আমাদের অভুক্ত রেখে কক্ষনো নিজে খেতে পারবেন না |
আর
আজকাল হয়েছি চরম ল্যাদখোর | প্রতিদিন ভিড় ট্রেন, বাসে উঠে যে দশা হয়, সেখানে কয়েকদিনের ছুটি মানে ঘরে বসে নির্ভেজাল আলস্য উপভোগ করা |
তাছাড়া এই গ্রীষ্মকালের (!!!) পুজোয় ভিড় ঠেলে
ঠাকুর দেখার পরিশ্রম করা আমার এই বিশাল গতরে সম্ভবও না |
তবে
যখন মধ্যপ্রদেশে ছিলাম তখন পুজোর কয়েকদিন বাঙালিয়ানা খুব চেগে উঠতো |
ওখানে চারটে পুজো কাটিয়েছি,
পুজোর দিনগুলোতে কলকাতার মন্ডপ,
ভিড়, কোলাহলকে খুব মিস করতাম | অথচ আজ বৃহত্তর কলকাতাতে বসে ওসব কিছুই অনুভব
করি না |
হাতের
নাগালে থাকলে কোনো মূল্যবান জিনিসই উপযুক্ত কদর পায় না,
তাই তো ?????
© অর্ঘ্য দাস @ টুকটাক লেখালেখি, দুর্গানগর, 27-09-2017
=================================================================
Comments
Post a Comment