Skip to main content

সোশ্যাল মিডিয়ার গুজবচরিত


১) “অমুক রাতে আকাশে সবুজ চাঁদ দেখা যাবে” 

২) “তমুক রাতে গোলাপী চাঁদ দেখা যাবে”

৩) “অমুক রাতের আকাশে মঙ্গল গ্রহকে এত বড় দেখাবে যে মনে হবে যেন আকাশে দু’টো চাঁদ রয়েছে |”



৪)  “NASA জানিয়েছে যে আজ রাতে মারাত্মক ভূমিকম্প আসছে, সতর্ক থাকুন আর সকলকে সাবধান করুন এই মেসেজ / পোস্টটি শেয়ার করে |”

৫) “NASA জানিয়েছে যে অমুক দিন থেকে একটানা সাত (/পনেরো ) দিন পৃথিবী অন্ধকার থাকবে |”


৬) “BBC World News জানিয়েছে যে আজ রাত্রে অমুক সময়ে পৃথিবীতে ভয়ঙ্কর ‘মহাজাগতিক রশ্মি’ (Cosmic ray) প্রবেশ করবে | তাই NASA পৃথিবীবাসীকে ওই সময়ে নিজেদের মোবাইল ফোন সহ সমস্ত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ‘স্যুইচ অফ’ করে রাখতে নির্দেশ দিয়েছে |”

৭)  “NASA জানিয়েছে অমুক দিন বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্রের সজ্জারীতির পরিবর্তনের ফলে অল্প পরিমানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির হেরফের হবে, ফলে খুব সামান্য সময়ের জন্য হলেও পৃথিবীবাসী ভারশূন্যতা (weightlessness) অনুভব করবে |”

৮) “আর্ত/পীড়িত/অসুস্থ মানুষের এই ছবিটি শেয়ার করলে প্রতি শেয়ারের জন্য ফেসবুক ওদের এক ডলার করে দেবে “



৯) “সকলকে অভিনন্দন ! ভারতের জাতীয় সঙ্গীত UNESCO-র বিচারে পৃথিবীর সেরা জাতীয় সঙ্গীতের শিরোপা পেয়েছে !”

কিম্বা
“ইন্দোর-ভোপাল সড়কের মাঝে তোলা ভারতের মানচিত্রের ন্যায় ছবিটি জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পরে আন্তর্জাতিক পুরস্কারের পথে”

১০) রুপকথা বা হিন্দু পুরাণ সংক্রান্ত গুজব :--
 “অমুক জায়গার সমুদ্রের তটে ‘মৎসকন্যা’ দেখা গেছে”




অথবা
“অমুক জায়গায় খননকার্যে দৈত্যাকৃতি কঙ্কাল (ভীমপুত্র ঘটোৎকচের) পাওয়া গিয়েছে”



কিম্বা
“হন্ডুরাসে সাত মাথাওয়ালা সাপের দেখা মিলেছে, ঠিক যেরকম পুরাণে বর্ণিত আছে”

বা
“শ্রীলঙ্কায় খনন করে পাওয়া গেছে হনুমানের গদা.........”
১১) বিভিন্ন ছবি দিয়ে বলা থাকে “নিচের কমেন্ট বক্সে নিজের নাম / ১/STOP লিখুন আর ম্যাজিক দেখুন”

                             



১২) “গতকাল এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে ‘Frooti’র কারখানার এক HIV-আক্রান্ত কর্মী নিজের রক্ত বেশ কিছু বোতলে মিশিয়ে দিয়েছে, ফলে পুলিশ এই ড্রিংকটি পান করতে জনসাধারনকে নিষেধ করেছে”



কিম্বা "একদল লোক কলার মধ্যে AIDS এর ভাইরাস ঢুকিয়ে দিচ্ছে সিরিঞ্জ দিয়ে"


১৩) সব শেষে আসি দেবদেবীর ছবি সম্বলিত পোস্টগুলির ব্যাপারে | এগুলো প্রধানতঃ দু’ধরনের হয় :

ক) প্রথম ধরণের পোস্ট অপেক্ষাকৃত নিরীহ গোছের - এখানে  প্রলোভনমূলক কথা বলা থাকে যে পোস্টটি শেয়ার করলেই নাকি সমস্ত দুঃখ-কষ্টের অবসান ঘটবে ও সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ হবে !!







খ) দ্বিতীয় ধরনের পোস্ট রীতিমত হুমকিমূলক - সরাসরি ‘থ্রেট’ দেওয়া থাকে যে যদি পোস্টটা দেখা সত্ত্বেও শেয়ার না করা হয় তাহলে মহা বিপদে পড়তে হবে বা চরম দুর্ভাগ্য নেমে আসবে !!

               
              


---------- উপরে বর্ণিত পোস্টগুলির সবকটিই 100% গুজব বা মিথ্যা | কিছু বিকৃতমনস্ক মানুষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জনমানসে বিভ্রান্তি ছড়াবার উদ্দেশ্যে কিম্বা নিছকই মজা করার জন্য এসব ফেসবুক/হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদিতে ছড়িয়ে দিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত | সাধারণ মানুষ সরল মনে এগুলোকে সত্যি ভেবে শেয়ার বা ফরওয়ার্ড করে চলেছেন, ফলে আরো বেশি মানুষের কাছে এই বিভ্রান্তিকর তথ্য গিয়ে পৌছাচ্ছে |

তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ এসব অদ্ভুত পোস্ট দেখে প্রভাবিত হবেন না | এগুলো শেয়ার করার আগে অন্ততঃ একবার Google Search দিয়ে ব্যাপারটা সম্বন্ধে একটু দেখে নিন কিম্বা কোনো পরিচিত বিজ্ঞানমনস্ক মানুষকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করুন | নিদেনপক্ষে নিজে অন্ততঃ আরেকবার ভেবে দেখুন !!
(এই ব্লগে দেওয়া প্রতিটি ছবিই ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)

     - অর্ঘ্য দাস, দুর্গানগর, 17-04-2016 







Comments

Popular posts from this blog

নরেন্দ্রপুরের স্মৃতিকথা (Memoirs of RKM Narendrapur) : পর্ব ১০ : ইতিহাস ক্লাস

**********************************************************************      “ ইতিহাসে পাতিহাস, ভূগোলেতে গোল, অঙ্কেতে মাথা নেই, হয়েছি পাগল ”  বহুদিনের পুরোনো ছড়া  |  আমরা সবাই ছোটবেলায় এটা শুনেছি  |  ‘পাতিহাস’ বলতে কি বোঝানো হয়েছে জানিনা, তবে দুটো মানে বের করা যায়  |  এক, পাতিহাস ডিম পাড়ে, আর ডিম মানেই স্যারের দেওয়া ‘গোল্লা’  |  অন্য মানেটা ক্রিকেটের ‘Duck’ যার অর্থও শূন্য  |  মোদ্দা কথা ইতিহাসে নম্বর পাওয়া দুষ্কর  |  “পরীক্ষার্থী হত ইতি উত্তর লেখবার সময়াভাব, সাময়িক স্মৃতিনাশ এবং স্যারের স্কেল মাপা চেকিং”  |   ফলাফল মুখের হাসিতে ইতি টেনে দেওয়ার উপযোগী মার্কশীট  | পাঠকমাত্রেই মানবেন যে ইতিহাসের সাথে ঘুমের একটা নিবিড় সম্বন্ধ আছে  |  তা সে ইতিহাস বই হোক বা ইতিহাস ক্লাস  |  ছাত্রজীবনে সন্ধ্যাবেলা অন্য যেকোনো সাবজেক্ট পড়ার সময় দিব্বি জেগে থাকতাম. কিন্তু ইতিহাস বই খুললেই কেন জানি পাঁচ মিনিটেই ঘুম চলে আসতো ! আমি তো একবার ক্লাস নাইনে একবার ইতিহাস পরীক্ষা চলাকালীনই ঘুমি...

কাজের মাসি

কাজের মাসি গতকাল আনন্দবাজারের রবিবাসরীয় তে একটা লেখা পড়লাম কাজের মাসিপিসি দের নিয়ে | এ প্রসঙ্গে নিজের কিছু অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেল – তখন আমি যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে পড়ি আর থাকি গড়ফা নামক একটি জায়গায় মেসবাড়িতে | আমাদের মেসে রান্না, বাসন মাজা, ঘর পরিষ্কার ইত্যদি কাজ করত সবিতা দি | সদা হাস্যমুখ এই সবিতাদির বাড়ি ছিল নরেন্দ্রপুরে | মাঝেমাঝেই সবিতাদির নানা উদ্ভট কথাবার্তায় আমরা যারপরনাই পুলকিত হতাম | আমাদের মেসের মনোজিত আর সুদীপকে চিরকাল সবিতাদি ‘মনোদীপ ভাই’ আর ‘সুজিত ভাই’ বলেই ডেকে এসেছে, বহুবার সংশোধন করার চেষ্টা করেও কোনো লাভ হয়নি | আমাকে বলত ‘মোটাভাই’ | স্কচ বাইট কে বলত ‘কসবা’ | মাছের ঝোল, মাংসের ঝোল কে বলত ‘মাছের তরকারী’ আর ‘মাংসের তরকারী’ | তখনো তৃনমূল ক্ষমতায় আসেনি, একদিন সবিতাদি এসে বলল, “ও ভাই জানো, আমাদের পাড়ায় কাল রাতে ঝামেলা হয়েচিল, এখন নতুন কি একটা পার্টি এসেচে না - ‘তিন আঙ্গুল’ না ‘দুই আঙ্গুল’ কি একটা নাম, তাদের সাথে ছি পি এমের | মারপিট ও হয়েচে |” আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম নতুন কোনো পার্টি সত্যিই বোধহয় এসেছে যাদের চিহ্ন ওই আঙ্গুলমার্কা ভিকট্রি সাইন ! মিনিট খানেক পর...

নরেন্দ্রপুরের স্মৃতিকথা (Memoirs of RKM Narendrapur) : পর্ব ৩ - ঘন্টা, আলু এবং ব্রহ্ম

নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে ছাত্রদের দৈনন্দিন আবাসিক জীবনকে নিখুঁতভাবে তুলে ধরেছে এই ছোট্ট ছড়াটা - “ নরেন্দ্রপুরে সময় ঘন্টাময় , খাদ্য আলুময় , চিন্তা ব্রহ্মময়  | ” অনেকদিন আগে শোনা এই ছড়ার রচয়িতার নাম আমার জানা নেই , কিন্তু ছড়াটা এতটাই প্রাসঙ্গিক যে এটা আমার মনের মধ্যে যেন গেঁথে গেছে  | ************************************************************ প্রথম ভাগ : ঘন্টা বাস্তবিকই আমাদের আবাসিক জীবন ছিল ঘন্টা-নিয়ন্ত্রিত  |   ভোর পাঁচটায় rising bell শুনে ঘুম ভাঙতো , তারপর ঘন্টার তালে তালে সেই যে লেজ তুলে দৌড় শুরু হত , সেটা থামত রাত সাড়ে দশটা নাগাদ , ‘lights out’ এর ঘন্টাধ্বনি শুনে  |   চার বেলা ডাইনিং হলে খেতে যাওয়ার ঘন্টা , প্রার্থনা কক্ষে যাবার ঘন্টা , স্কুলে যাবার ঘন্টা , হোস্টেলে পড়া শুরু করার ঘন্টা , খেলতে যাবার ঘন্টা , রাত্রে শুতে যাবার ঘন্টা – আমাদের প্রতিটা কাজ ছিল ঘন্টা-নিয়ন্ত্রিত  | প্রতিদিন এই সময়ে-অসময়ে ঘন্টা বাজানোর জন্য প্রত্যেক ভবনে (হস্টেলে) প্রতি মাসে দু’জন ছাত্রকে নিয়োগ করা হতো , এদের বলা হতো ‘...