Skip to main content

শাস্তি

____________________________________________
বিস্ফোরণে নিরীহ মানুষ মরুক ক্ষতি নেই,
সন্ত্রাসবাদীর যেন ফাঁসি না হয় !
মরা মানুষগুলোর প্রতি মানবিকতা দেখিয়ে কি হবে,
ওরা তো মরেই গেছে,
বরং যে বেঁচে আছে তার জন্য থাকুক সহানুভূতি |
ধর্ষিতার থেকেও ধর্ষকের বাঁচার অধিকার বেশি,
তাই নাবালক বলে ছাড়া পায় ধর্ষক;
প্রমাণের অভাবে ছাড়া পায় ধর্ষক;
উন্নত রাষ্ট্রের সহিষ্ণুতার পরাকাষ্ঠা !!
অন্যদিকে, গুরু দোষে লঘু দন্ড প্রাপ্ত আসামী দেয় প্রকাশ্যে হুমকি,
ক্লীব রাষ্ট্র আর তার ক্লীব আইন চুপ করে বসে দেখে !
এসব  নিয়ে হয় না কোনো প্রতিবাদী মিছিল,
হয় না পুরস্কার ফেরতের নাটক,
সকলে থাকে সুখে, একমাত্র ভুক্তভোগী বাদে !!
কিন্তু যদি মৃত্যুদন্ড হয় অপরাধীর -
মানবদরদীর দল হয় সোচ্চার,
‘গেল গেল’ ওঠে রব,
ঝলসে ওঠে লেখকের কলম ||
সত্যিই তো, অপরাধীকে হত্যা করে কি অপরাধকে আটকানো যায় নাকি ?
ধনঞ্জয়ের ফাঁসির পর কি নির্ভয়া-কান্ড ঘটেনি ?
নাকি ইয়াকুবের ফাঁসির পর উধমপুর-গুরুদাসপুর-পাঠানকোট হয়নি ?
ছেঁদো যুক্তি সব তৈরী !
সুতরাং হে সহনশীল উন্নত রাষ্ট্র - অপরাধী নয়, ঘৃণা কর অপরাধকে,
বন্ধ হোক মৃত্যুদন্ড, দন্ডদাতা কাঁদুক দন্ডিতের সাথে,
অক্ষত থাকুক মানবতাবাদীদের বিবেক আর তাঁদের মিডিয়া ফুটেজ,
রাষ্ট্রের প্রতিহিংসাপরায়ণ মধ্যযুগীয় বর্বরতা থাকুক শুধু বইয়ের পাতায় !!
*    *   *   *   *  *    *    *    *    *   *    *    *    *    *    *
আর যারা সব হারালো তারা ? তাদের চোখের জলের কি নেই কোনো দাম ?
ধূর !! এতো প্রশ্ন কিসের ?
পাচ্ছে তো ওরা ক্ষতিপূরণ আর সরকারী চাকরি, সান্ত্বনা পুরস্কারের মতন !!!
_______________________________________________
© অর্ঘ্য দাস, দুর্গানগর, ৩০-০১-২০১৬





Comments

Popular posts from this blog

নরেন্দ্রপুরের স্মৃতিকথা (Memoirs of RKM Narendrapur) : পর্ব ১০ : ইতিহাস ক্লাস

**********************************************************************      “ ইতিহাসে পাতিহাস, ভূগোলেতে গোল, অঙ্কেতে মাথা নেই, হয়েছি পাগল ”  বহুদিনের পুরোনো ছড়া  |  আমরা সবাই ছোটবেলায় এটা শুনেছি  |  ‘পাতিহাস’ বলতে কি বোঝানো হয়েছে জানিনা, তবে দুটো মানে বের করা যায়  |  এক, পাতিহাস ডিম পাড়ে, আর ডিম মানেই স্যারের দেওয়া ‘গোল্লা’  |  অন্য মানেটা ক্রিকেটের ‘Duck’ যার অর্থও শূন্য  |  মোদ্দা কথা ইতিহাসে নম্বর পাওয়া দুষ্কর  |  “পরীক্ষার্থী হত ইতি উত্তর লেখবার সময়াভাব, সাময়িক স্মৃতিনাশ এবং স্যারের স্কেল মাপা চেকিং”  |   ফলাফল মুখের হাসিতে ইতি টেনে দেওয়ার উপযোগী মার্কশীট  | পাঠকমাত্রেই মানবেন যে ইতিহাসের সাথে ঘুমের একটা নিবিড় সম্বন্ধ আছে  |  তা সে ইতিহাস বই হোক বা ইতিহাস ক্লাস  |  ছাত্রজীবনে সন্ধ্যাবেলা অন্য যেকোনো সাবজেক্ট পড়ার সময় দিব্বি জেগে থাকতাম. কিন্তু ইতিহাস বই খুললেই কেন জানি পাঁচ মিনিটেই ঘুম চলে আসতো ! আমি তো একবার ক্লাস নাইনে একবার ইতিহাস পরীক্ষা চলাকালীনই ঘুমি...

কাজের মাসি

কাজের মাসি গতকাল আনন্দবাজারের রবিবাসরীয় তে একটা লেখা পড়লাম কাজের মাসিপিসি দের নিয়ে | এ প্রসঙ্গে নিজের কিছু অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেল – তখন আমি যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে পড়ি আর থাকি গড়ফা নামক একটি জায়গায় মেসবাড়িতে | আমাদের মেসে রান্না, বাসন মাজা, ঘর পরিষ্কার ইত্যদি কাজ করত সবিতা দি | সদা হাস্যমুখ এই সবিতাদির বাড়ি ছিল নরেন্দ্রপুরে | মাঝেমাঝেই সবিতাদির নানা উদ্ভট কথাবার্তায় আমরা যারপরনাই পুলকিত হতাম | আমাদের মেসের মনোজিত আর সুদীপকে চিরকাল সবিতাদি ‘মনোদীপ ভাই’ আর ‘সুজিত ভাই’ বলেই ডেকে এসেছে, বহুবার সংশোধন করার চেষ্টা করেও কোনো লাভ হয়নি | আমাকে বলত ‘মোটাভাই’ | স্কচ বাইট কে বলত ‘কসবা’ | মাছের ঝোল, মাংসের ঝোল কে বলত ‘মাছের তরকারী’ আর ‘মাংসের তরকারী’ | তখনো তৃনমূল ক্ষমতায় আসেনি, একদিন সবিতাদি এসে বলল, “ও ভাই জানো, আমাদের পাড়ায় কাল রাতে ঝামেলা হয়েচিল, এখন নতুন কি একটা পার্টি এসেচে না - ‘তিন আঙ্গুল’ না ‘দুই আঙ্গুল’ কি একটা নাম, তাদের সাথে ছি পি এমের | মারপিট ও হয়েচে |” আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম নতুন কোনো পার্টি সত্যিই বোধহয় এসেছে যাদের চিহ্ন ওই আঙ্গুলমার্কা ভিকট্রি সাইন ! মিনিট খানেক পর...

নরেন্দ্রপুরের স্মৃতিকথা (Memoirs of RKM Narendrapur) : পর্ব ৩ - ঘন্টা, আলু এবং ব্রহ্ম

নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে ছাত্রদের দৈনন্দিন আবাসিক জীবনকে নিখুঁতভাবে তুলে ধরেছে এই ছোট্ট ছড়াটা - “ নরেন্দ্রপুরে সময় ঘন্টাময় , খাদ্য আলুময় , চিন্তা ব্রহ্মময়  | ” অনেকদিন আগে শোনা এই ছড়ার রচয়িতার নাম আমার জানা নেই , কিন্তু ছড়াটা এতটাই প্রাসঙ্গিক যে এটা আমার মনের মধ্যে যেন গেঁথে গেছে  | ************************************************************ প্রথম ভাগ : ঘন্টা বাস্তবিকই আমাদের আবাসিক জীবন ছিল ঘন্টা-নিয়ন্ত্রিত  |   ভোর পাঁচটায় rising bell শুনে ঘুম ভাঙতো , তারপর ঘন্টার তালে তালে সেই যে লেজ তুলে দৌড় শুরু হত , সেটা থামত রাত সাড়ে দশটা নাগাদ , ‘lights out’ এর ঘন্টাধ্বনি শুনে  |   চার বেলা ডাইনিং হলে খেতে যাওয়ার ঘন্টা , প্রার্থনা কক্ষে যাবার ঘন্টা , স্কুলে যাবার ঘন্টা , হোস্টেলে পড়া শুরু করার ঘন্টা , খেলতে যাবার ঘন্টা , রাত্রে শুতে যাবার ঘন্টা – আমাদের প্রতিটা কাজ ছিল ঘন্টা-নিয়ন্ত্রিত  | প্রতিদিন এই সময়ে-অসময়ে ঘন্টা বাজানোর জন্য প্রত্যেক ভবনে (হস্টেলে) প্রতি মাসে দু’জন ছাত্রকে নিয়োগ করা হতো , এদের বলা হতো ‘...