Skip to main content

Posts

Showing posts from April, 2015

নরেন্দ্রপুরের স্মৃতিকথা (Memoirs of RKM Narendrapur): পর্ব ৭ : আবাসিক জীবনের সাতকাহন

_____________________________________________________________________ দিনের শুরু :  ঢং ঢং ঢং … সাতসকালে চরম বিরক্তিকর সেই Rising bell | সেই ভয়াবহ P.T.-র হাতছানি | মাঝখানে গোদের ওপর বিষফোঁড়া স্বরূপ প্রায়শই হট ড্রিংকের জায়গায় চিরতার জলের আবির্ভাব, সাতসকালেই অন্নপ্রাশনের ভাত বের করার সুনিশ্চিত বন্দোবস্ত | তারপর জুনিয়রের প্রতুলদার সামনে দড়িলাফানো, কিংবা সিনিয়রের সন্তোষ সাহাদার সামনে ফ্রগব্যালান্স-ধনুরাসন বা গম্ভীরমুখে অরুণদার ভাষণ শোনা (হেসেছ তো ফেঁসেছ, জুটবে বেদম প্রহার) অথবা ক্যাম্পাস চক্কর দেবার সময় দুর্দান্তপ্রতাপ শরদ মিরানিদার চোখ এড়িয়ে ঝোপঝাড়ের মধ্যে দিয়ে শর্টকাটের চেষ্টা | সেইসময় মনে হতো পৃথিবীর সবথেকে সুখী মানুষ হল তারা যাদের সেই মাসে ‘মর্নিং প্রেয়ার হল ওয়ার্কার’-এর ডিউটি পড়ার সুবাদে পিটি অফ রয়েছে | পিটি থেকে কোনমতে প্রাণটুকু সম্বল করে ভবনে ফিরে স্যাটাস্যাট কুমড়োর ঘ্যাটের মতো বিদ্যুতগতিতে ধুতি-পাঞ্জাবি পরে প্রেয়ার হলে প্রবেশ | যদিও এই প্রেয়ার হল ভবিষ্যতের বহু কৃতী শিল্পীর (গাইয়ে-তবলচি-বাগ্মী) শৈশবের শিল্পসাধনার আঁতুড়ঘর, তবুও অধিকাংশ জনগনের কাছে ওটা ছিল পিটির হ...

বাজে গল্প ১ : দামোদর-চরিত

______________________________________________________________ দামু আমার মাসতুতো ভাই, ভালো নাম দামোদর, আমার থেকে বছর দশেকের ছোট, ‘খাইয়ে’ হিসাবে আত্মীয়মহলে বিশেষভাবে পরিচিত | বিশাল ভুঁড়ি না থাকলেও ভুরি ভুরি খাওয়ায় ওর জুড়ি নেই | দশাবতারের মধ্যে চারজন - ম ৎস্য , কুর্ম, বরাহ  এবং রাম ( rum) - বহুবার আমার এই উদারচিত্ত ভাইটির উদরস্ত হয়েছেন | আরেক অবতার শ্রীকৃষ্ণকে ডাইরেক্ট বাগে না পেলেও কেশবের চানাচুর, কৃষ্ণ চন্দ্র দাস aka কে.সি.দাসের রসগোল্লা, গোপাল জর্দা এবং শ্যাম-পেন আমার এই ভাইটি মুখস্থ ও পেটস্থ করেছে | দামু খাসা ছেলে, খাসি ওর খাস পছন্দের জিনিস, সাতসকালেও বাসি মুখে হাসি নিয়ে রাশিরাশি খাসি খেতে ওর কোনো আপত্তি নেই | হাসতে হাসতে এক ডজন হাঁসের ডিম ভোজন করা, peacefully পনেরো পিস্ মাছ হাপিস করা কিংবা চুপচাপ গোটা পাঁচ চিকেন চাপ পেটের মধ্যে পাচার করা – কোনোকিছুতেই ওর জুড়ি নেই | প্লেটে ওমলেট, ‘কাটলেট’ ইত্যাদি পড়লে একটুও ‘লেট’ না করে বস্তুটি ‘কাট’ করে মুখের মধ্যে ‘পেস্ট’ করে দেয়, বুলেটের গতিতে ছুরি-কাঁটাচামচ চালিয়ে | এ রাজ্যে হেন কোনো মিঠাই নেই যা ওর পেটে ঠাঁই পায়নি ছুরি-কাঁটাচামচ...

বউ-কথা-ক’

                          না, এই লেখা কোনো পাখিকে নিয়ে নয় | তবুও এর থেকে ভালো কোনো নাম মাথায় এল না | নিজের বউকে নিয়ে কথা কইতে ভীষণ ভালবাসেন এমন একজন পত্নীনিষ্ঠ বাঙালী ভদ্রলোককে নিয়ে এই লেখা | কর্মসূত্রে এই ভদ্রলোকের সাথে আমার আলাপ | যদিও তাঁর সাথে আমার আর যোগাযোগ নেই তবুও ভবিষ্যতে যাতে কোনরকম মানহানির মোকদ্দমায় পড়তে না হয় সেজন্য চরিত্রের নামগুলো কিঞ্চি ৎ পরিবর্তিত করে এই লেখা আপনাদের সামনে পরিবেশন করছি | বিশ্বজিত-মোহিতা দুজনেই পেশায় শিক্ষক, কর্মসূত্রে বহুদিন ধরেই কোলকাতার বাইরে | পাঞ্জাব, উত্তরাখন্ডে বেশ কিছুদিন কাটিয়ে এখন মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা | বিশ্বজিতবাবু একটি আবাসিক বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক, মোহিতা দেবী একটি ডে-স্কুলে বিজ্ঞান পড়ান | দুজনে থাকেন বিশ্বজিতবাবুর কোয়ার্টারে | বছরে দুইবার ছুটিতে সোদপুরে নিজেদের বাড়িতে বেড়াতে যান | বৌপাগল এই মানুষটির আরো দুটি শখ ছিল – আত্মপ্রশংসা এবং পরনিন্দা পরচর্চা | স্ত্রী-বন্দনায় যদি তিনি পি.এইচডি ডিগ্রীপ্রাপ্ত হন, তাহলে এই দুটি বিষয়েও নিঃসন্দেহে তিনি এম.ফিল কর...