Skip to main content

কিচোবা – এক মহাকৃপণের উপাখ্যান





‘মিতব্যয়ী’, ‘হিসেবী’, ‘কৃপণ’ শব্দগুলোর অর্থ কাছাকাছি হলেও এরা সমার্থক নয়, যদিও এদের পার্থক্যের নির্দিষ্ট কোনো সীমারেখা নেই | ফলে কোনো মানুষ সারা বিশ্বসংসারের চোখে ‘কিপ্টে’ বা ‘হাঁড়-কিপ্টে’ হলেও সে নিজেকে মিতব্যয়ী’ বা ‘হিসেবী’ বলেই মনে করে | বাংলা সাহিত্যে এই ‘কিপ্টে’রা বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে আছে | শিবরাম চক্রবর্তী, তারাপদ রায় এবং অন্যান্য রম্যরচনাকারদের লেখায় মাঝেমাঝেই আমরা খুঁজে পাই এদের | সেই সব লেখা যাঁরা পড়েছেন তাঁরা জানেন যে ‘কৃপণতা’ কোনো মানসিক বিকার নয়, বরং বলা চলে এটা একটা শিল্প, যা অর্জন করতে বিশেষ দক্ষতা লাগে | আমার সৌভাগ্য যে এ জীবনে আমি কিছু বিখ্যাত শিল্পীর সংস্পর্শে এসেছি | তাঁদেরই একজনের কথা লিখলাম -

আমার এই বন্ধু কলেজ জীবনে হাঁড়কিপটে হিসাবে বন্ধুমহলে বিশেষ প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলো | সুন্দর আলোকিত একটা  পিতৃদত্ত নাম ওর ছিলো বটে, কিন্তু আমরা ওর নাম দিয়েছিলাম ‘কিচোবা’ | আরেঃ না না, এটা কোনো চীনা-জাপানী শব্দ নয়, ‘কিচোবা’ আসলে কিছু অর্থপূর্ণ বাংলা শব্দের আদ্যাক্ষর নিয়ে তৈরি, শব্দগুলো অশ্লীলতার দায়মুক্ত নয়, তাই বিস্তারিত ব্যাখা করলাম না, আশাকরি পাঠক নিজগুণে আন্দাজ করে নেবেন |

আমরা তখন যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে পড়ি আর থাকি যাদবপুর রেলস্টেশনের অন্যদিকে ‘গড়ফা’ নামক একটি জায়গায় মেসবাড়িতে | আমরা মোট পাঁচ জন একসাথে থাকতাম একটি 2BHK ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে | বাড়ি থেকে আমরা প্রত্যেকেই থাকা-খাওয়া-পড়াশুনা বাবদ বাড়ি থেকে মাসিকভাতা পেতাম ; কিন্তু ওই টাকায় সিনেমা দেখা, রেঁস্তোরায় খাওয়া, নিজের পছন্দমতো টুকটাক জিনিস কেনা, আনন্দ-স্ফূর্তি ইত্যাদির জোগান অসম্ভব ছিলো | ফলে সেইসময় আমরা অনেকেই নিজেদের হাতখরচ চালানোর জন্য প্রাইভেট টিউশন করতাম - কিন্তু কিচোবা তা করতো না, অথচ টাকাপয়সার টানাটানি হওয়া দুরে থাক বরঞ্চ ওই ক’বছরেই বাড়ি থেকে পাঠানো টাকা জমিয়ে কিচোবা প্রায় লাখপতি হয়ে গেছিলো, এই মারাত্মক সাফল্যের একমাত্র চাবিকাঠি ছিলো কিচোবার মারাত্মক কৃপণতা | একবার আমরা বন্ধুরা মিলে পুরী বেড়াতে গেছিলাম. সেখানে এক জ্যোতিষী কিচোবার হাত দেখে বলেছিলেন যে ও নাকি একদিন সুইস ব্যাঙ্কে একাউন্ট খুলবে | সেটা শোনার পর থেকে কিচোবা আরো বেশি কিপটে হয়ে গেছিলো |

বাচেলার্স আর মাস্টার্স-এর পাঁচ বছরে (2005 থেকে 2010 সাল) কিচোবা সিগারেট খেতোনা (একদম শেষেরদিকে অবশ্য সঙ্গদোষে শুরু করেছিলো), প্রেম করতো না , যাতায়াত-খরচের ভয়ে বছরে দু’বারের বেশি বাড়ি যেত না (কিচোবার বাড়ি উত্তরবঙ্গে), কেউ জন্মদিনের পার্টি না দিলে ভুলেও রেঁস্তোরায় যেত না, সিনেমা দেখতে যেত বটে কিন্তু ভুলেও মাল্টিপ্লেক্সে নয়, মদ্যপানের মজলিসে মাঝে মাঝে অংশগ্রহণ করত বটে কিন্তু সেজন্য অনেক সাধ্যসাধনা করতে হতো | কিচোবার বিলাসিতা বলতে ছিলো কোনদিন রান্নার মাসি না এলে স্থানীয় রেঁস্তোরা ‘জাইকা’ থেকে এক প্যাকেট চিকেন বিরিয়ানি নিয়ে এসে ঘরে বসে খাওয়া |

কিচোবার নানা কার্যকলাপের কয়েকটা এখানে তুলে ধরলাম -

ঘটনা - 1:
একদিন ইউনিভার্সিটি থেকে বাড়ি আসার পথে দেখি কিচোবা জাইকা রেঁস্তোরার সামনে একটা ঠোঙ্গা হাতে করে দাঁড়িয়ে আছে | আমাকে দেখতে পেয়ে হাসিমুখে এগিয়ে এসে বললো “চিকেন পকোড়া কিনেছি, খাবি?” | আমি ‘হ্যাঁ’ বলতেই ও হাতের ঠোঙ্গাটা খুলে আমার দিকে এগিয়ে দিলো, আমি তাকিয়ে দেখি ঠোঙ্গার মধ্যে সর্বসাকুল্যে একটি-ই পকোড়া আছে | বেচারা এতদিন পর একটা পকোড়া কিনেছে, সেটাতেও ভাগ বসাবো এতটা মহাপাতক আমি নই | অগত্যা কোনো একটা ছুতো দিয়ে সেদিন ওর নিমন্ত্রণ অস্বীকার করেছিলাম |

ঘটনা- 2
কিচোবা পারতপক্ষে বাড়ি যেত না, খরচের ভয়ে | সারাবছরে খুব বেশি হলে দু’বার কিচোবা বাড়ি যেত | কিন্তু সেবার কি একটা একটা জরুরী কারণে কিচোবাকে বাড়ি যেতেই হবে, এই যাওয়াটা তার ‘বার্ষিক বাড়ি যাওয়ার হিসাবের’ বাইরে | ট্রেন রাতের বেলায়, গৌড় এক্সপ্রেস | দুর্ভাগ্যক্রমে সেদিন সন্ধ্যাবেলায় রান্নার মাসি আসেনি, ফলে মেসে রান্না হয়নি | রাত আটটা-নটা নাগাদ আমরা বাইরের হোটেলে গিয়ে ভাত বা রুটি খেয়ে এলাম, কিন্তু কিচোবা মাত্র এক প্যাকেট গ্লুকোজ বিস্কুট (৩ টাকা দামের) কিনে ট্রেনে চড়ে বসলো | এই দুর্মূল্যের বাজারে ট্রেনের টিকিট কেনার পর আবার পয়সা খসিয়ে হোটেলে খাওয়ার বিলাসিতা কিচোবা দেখাতে পারেনি |


ঘটনা-3 :
আমাদের আরেক বন্ধু, মনোজিত, সপ্তাহে দু’দিন সেলিমপুরে প্রাইভেট টিউশন করতে যেত | একদিন দেখি কিচোবা আর মনোজিত গল্প করছে -

কিচোবা: আচ্ছা মনোজিত, তুই সেলিমপুরে কি করে যাস?
মনোজিত: বাসে করে |

কিচোবা: কত নেয় বাস ভাড়া?
মনোজিত: পাঁচ টাকা |

কিচোবা: ওখান থেকে ফিরিসও বাসে করে? 
মনোজিত: হ্যাঁ |

কিচোবা: তারপর এসে টিফিন করিস দোকান থেকে? 
মনোজিত: হ্যাঁ, নিশ্চই | ডিমটোস্ট আর চা |

কিচোবা: সেখানেও তো দশ টাকা খরচ | মানে বিকালে যাতায়াত আর খাওয়া নিয়ে কুড়ি টাকা খরচ?
মনোজিত: হ্যাঁ |

কিচোবা: দেখ, তার থেকে আমি একটা ভালো বুদ্ধি দিচ্ছি | যাওয়ার সময় বাসে করেই যা, কিন্তু পড়িয়ে আসবার পথে সেলিমপুর থেকে পাঁচ টাকা দিয়ে এক ঠোঙ্গা মুড়িমাখা কিনবি | তারপর ওটা খেতে খেতে ভেতরের গলির ভেতর দিয়ে হেঁটে গড়ফা চলে আসবি | পনেরো-কুড়ি মিনিটের বেশি সময়ও লাগবে না, আবার অন্যদিকে দশ টাকা বেঁচেও যাবে |

ঘটনা – 4
স্বল্প দূরত্বের যাতায়াতে কিচোবা যে একদমই বাসে চড়তো না তা নয়, তবে অটো বা রিকশা ছিল নৈব নৈব চ | এর একমাত্র কারণ হল অটো বা রিকশাতে উঠলে কোনো উপায়েই তার ভাড়া ফাঁকি দেওয়া সম্ভব নয় | অন্যদিকে কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের মতই কিচোবা বাসভাড়া ফাঁকি দেওয়ার দু-দুটো যুগান্তকারী কৌশল আবিষ্কার করেছিলো –

প্রথম : বাসে উঠে কিচোবা চুপচাপ বসে থাকত | গন্তব্যস্থল আসার একটু আগে কন্ডাকটরের কাছে গিয়ে এমন একটা জায়গার নাম বলত যেটা ওই বাসের রুটে পড়ে না | খুব স্বাভাবিকভাবেই কন্ডাকটর বলতো “দাদা, আপনি ভুল বাসে উঠেছেন ! এটা ওখানে যায়না | আপনি নেমে যান | কিচোবা তখন নেমে গিয়ে বাকি রাস্তাটা হেঁটে চলে আসতো |

দ্বিতীয় : গড়ফা থেকে SD4 বাসটি যাদবপুর ইউনিভার্সিটির পাশ দিয়ে যেত | কিচোবা ওই বাসে ওঠার প্রথম দিনেই লক্ষ্য করেছিলো ইউনিভার্সিটির চার নম্বর গেটের কাছে বাসটা পৌছলে পিছনের গেটের কন্ডাকটরটা নেমে যায় আর খানিক দুরের একটা চৌকি থেকে টিকিট নিয়ে আসে আর কিসব হিসেবনিকেশ করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে | পুরো ব্যাপারটায় মিনিট খানেক সময় লাগে, এর মধ্যে আরাম করে বাস থেকে নেমে চম্পট দেওয়া যায় | এর পর থেকে কিচোবা মাঝেমাঝেই বিনাপয়সায় ওই বাসে ভ্রমণ করতো |

ঘটনা – 5
কলেজ পাশের পর যখন সব বন্ধুরা একত্র হয়েছি তখনও কিচোবা খেল দেখাতে ছাড়েনি | যেমন – আগের বছর আমরা এক বন্ধুর বিয়েতে নদিয়া জেলার মাজদিয়া গিয়েছিলাম | শিয়ালদা থেকে দুপুর 2-05 এর গেদে লোকালে চড়ে বসেছি | হরেকরকম হকার তাদের জিনিস নিয়ে হাঁকডাক করে চলেছে, এমন সময়ে এক ডালমুটওয়ালা এলো | লোকটির কাছে তিনটে জিনিস – ডালমুট, সল্টেড বাদাম আর চিঁড়েভাজা – সবই ছোটো ছোটো পাঁচ টাকার প্যাকেটে | লোকটি এক ঠোঙ্গা কাঁচা লঙ্কা নিয়ে এসেছে, যারা চিঁড়েভাজা কিনছে তাদের একটা করে লঙ্কা দিচ্ছে | হঠাৎ করে কিচোবা প্রশ্ন করে বসলো, “আচ্ছা দাদা, লঙ্কাটা কি ফ্রি তে দিচ্ছেন নাকি ওর জন্য আলাদা করে দাম লাগবে?”

ঘটনা – 6
মাস্টার ডিগ্রী শেষ করে কিচোবা পিএইচডি করেছে | সেই গবেষনার কাজে তাকে বেশ কয়েকবার বিদেশে যেতে হয়েছে | প্লেনে যাতায়াতের সময় যে টিফিন দেওয়া হয় সেগুলোর বেশিরভাগটাই  কিচোবা ব্যাগে ভরে ফেলে | এরপরের বেশ কয়েকদিনের টিফিন সারতে ওই খাবারগুলো কাজে লাগে | এভাবে বেশ খানিকটা পয়সা বাঁচিয়ে ফেলে কিচোবা |

পুনশ্চ: 

কিচোবাকে নিয়ে লেখার পর একটা অভূতপূর্ব, আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটেছে – কিচোবা নিজে মোবাইলের ব্যালেন্স খরচ করে আমায় ফোন করেছে এবং বেশ কিছুক্ষণ গল্প করেছে | যদিও এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মাত্র এবং এটিকে কিচোবার স্বভাব পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসাবে ধরলে সেটা খুবই ভুল হবে | কিচোবা আগের মতই আছে, বহাল তবিয়তে, স্বমহিমায় | এই লেখাটা লিখেছি বলে রাগ তো করেই নি, বরং ভিতরে ভিতরে খানিকটা খুশিই হয়েছে বলে মনে হলো | খবর পেয়েছি খুব শীঘ্রই কিচোবা বিয়ে করছে এবং খরচ সাশ্রয়ের জন্য মধুচন্দ্রিমায় একাই যাচ্ছে, বউকে সঙ্গে না নিয়ে |



Comments

  1. অর্ঘ্য তোমার লেখনী গুলো অপূর্ব। বেশ কটা পড়ে ফেলেছি। আরো সুন্দর সুন্দর প্রবন্ধের আশায় রইলাম।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

নরেন্দ্রপুরের স্মৃতিকথা (Memoirs of RKM Narendrapur) : পর্ব ১০ : ইতিহাস ক্লাস

**********************************************************************      “ ইতিহাসে পাতিহাস, ভূগোলেতে গোল, অঙ্কেতে মাথা নেই, হয়েছি পাগল ”  বহুদিনের পুরোনো ছড়া  |  আমরা সবাই ছোটবেলায় এটা শুনেছি  |  ‘পাতিহাস’ বলতে কি বোঝানো হয়েছে জানিনা, তবে দুটো মানে বের করা যায়  |  এক, পাতিহাস ডিম পাড়ে, আর ডিম মানেই স্যারের দেওয়া ‘গোল্লা’  |  অন্য মানেটা ক্রিকেটের ‘Duck’ যার অর্থও শূন্য  |  মোদ্দা কথা ইতিহাসে নম্বর পাওয়া দুষ্কর  |  “পরীক্ষার্থী হত ইতি উত্তর লেখবার সময়াভাব, সাময়িক স্মৃতিনাশ এবং স্যারের স্কেল মাপা চেকিং”  |   ফলাফল মুখের হাসিতে ইতি টেনে দেওয়ার উপযোগী মার্কশীট  | পাঠকমাত্রেই মানবেন যে ইতিহাসের সাথে ঘুমের একটা নিবিড় সম্বন্ধ আছে  |  তা সে ইতিহাস বই হোক বা ইতিহাস ক্লাস  |  ছাত্রজীবনে সন্ধ্যাবেলা অন্য যেকোনো সাবজেক্ট পড়ার সময় দিব্বি জেগে থাকতাম. কিন্তু ইতিহাস বই খুললেই কেন জানি পাঁচ মিনিটেই ঘুম চলে আসতো ! আমি তো একবার ক্লাস নাইনে একবার ইতিহাস পরীক্ষা চলাকালীনই ঘুমি...

কাজের মাসি

কাজের মাসি গতকাল আনন্দবাজারের রবিবাসরীয় তে একটা লেখা পড়লাম কাজের মাসিপিসি দের নিয়ে | এ প্রসঙ্গে নিজের কিছু অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেল – তখন আমি যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে পড়ি আর থাকি গড়ফা নামক একটি জায়গায় মেসবাড়িতে | আমাদের মেসে রান্না, বাসন মাজা, ঘর পরিষ্কার ইত্যদি কাজ করত সবিতা দি | সদা হাস্যমুখ এই সবিতাদির বাড়ি ছিল নরেন্দ্রপুরে | মাঝেমাঝেই সবিতাদির নানা উদ্ভট কথাবার্তায় আমরা যারপরনাই পুলকিত হতাম | আমাদের মেসের মনোজিত আর সুদীপকে চিরকাল সবিতাদি ‘মনোদীপ ভাই’ আর ‘সুজিত ভাই’ বলেই ডেকে এসেছে, বহুবার সংশোধন করার চেষ্টা করেও কোনো লাভ হয়নি | আমাকে বলত ‘মোটাভাই’ | স্কচ বাইট কে বলত ‘কসবা’ | মাছের ঝোল, মাংসের ঝোল কে বলত ‘মাছের তরকারী’ আর ‘মাংসের তরকারী’ | তখনো তৃনমূল ক্ষমতায় আসেনি, একদিন সবিতাদি এসে বলল, “ও ভাই জানো, আমাদের পাড়ায় কাল রাতে ঝামেলা হয়েচিল, এখন নতুন কি একটা পার্টি এসেচে না - ‘তিন আঙ্গুল’ না ‘দুই আঙ্গুল’ কি একটা নাম, তাদের সাথে ছি পি এমের | মারপিট ও হয়েচে |” আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম নতুন কোনো পার্টি সত্যিই বোধহয় এসেছে যাদের চিহ্ন ওই আঙ্গুলমার্কা ভিকট্রি সাইন ! মিনিট খানেক পর...
  ঝাড়গ্রাম : বসন্ত ১৪২৭ স্কুল পাশ করেছি সতেরো বছর হয়ে গেল | তারপর এই প্রথম আমার সুযোগ হলো স্কুলের বন্ধুদের সাথে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার | দু তিনটে জায়গা মাথায় ছিল – ঘাটশিলা , ঝাড়গ্রাম, অযোধ্যা পাহাড় | এই বসন্তের শুরুতে তিনটে জায়গাই মনোরম | শেষমেষ ঝাড়গ্রাম WBFDC এর গেস্ট হাউসের ছবি দেখে সেটাই ফাইনাল করা হলো | 6 ই মার্চ, 2021, শনিবার          ডিমসেদ্ধ : সকাল সাড়ে দশটা - ক্যালেন্ডারে মার্চের শুরু হলেও বেজায় গরম. আমি দরদর করে ঘামছি ডেবরা চৌমাথায় (পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা) দাঁড়িয়ে, হাতে আমার একুশটা হাঁসের ডিম সেদ্ধ, সাথে পেঁয়াজ লঙ্কা কুচি এবং সাদা ও কালো নুন | এক সপ্তাহ আগে করা প্ল্যান অনুযায়ী আমরা নাকি আগামী দু’ ঘন্টায় গাড়িতে বসে পার হেড পাঁচটা করে হাঁসের ডিম খাবো | ওদিকে সৌমাভ ওর গাড়িতে গোল (সুমিত্র) আর পকাই (অর্ক) কে নিয়ে আসছে কলকাতা থেকে |          বব মার্লে : শেষমেষ আমায় প্রায় ঘন্টা খানেক রোদে দাঁড় করানোর পর তাঁরা এলেন এবং বসন্তের এই অকাল দাবদাহ থেকে আমায় মুক্তি দিলেন | ঠান্ডা গাড়িতে উঠে ওদের আনা এগ স্যান্ডউইচ আর কোলাঘাট KFC থেকে কেনা মুর...