Skip to main content

Posts

Showing posts from February, 2015

কিচোবা – এক মহাকৃপণের উপাখ্যান

‘মিতব্যয়ী’, ‘হিসেবী’, ‘কৃপণ’ শব্দগুলোর অর্থ কাছাকাছি হলেও এরা সমার্থক নয়, যদিও এদের পার্থক্যের নির্দিষ্ট কোনো সীমারেখা নেই  |  ফলে কোনো মানুষ সারা বিশ্বসংসারের চোখে ‘কিপ্টে’ বা ‘হাঁড়-কিপ্টে’ হলেও সে নিজেকে মিতব্যয়ী’ বা ‘হিসেবী’ বলেই মনে করে  |  বাংলা সাহিত্যে এই ‘কিপ্টে’রা বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে আছে  |  শিবরাম চক্রবর্তী, তারাপদ রায় এবং অন্যান্য রম্যরচনাকারদের লেখায় মাঝেমাঝেই আমরা খুঁজে পাই এদের  |  সেই সব লেখা যাঁরা পড়েছেন তাঁরা জানেন যে ‘কৃপণতা’ কোনো মানসিক বিকার নয়, বরং বলা চলে এটা একটা শিল্প, যা অর্জন করতে বিশেষ দক্ষতা লাগে  |   আমার সৌভাগ্য যে এ জীবনে আমি কিছু বিখ্যাত শিল্পীর সংস্পর্শে এসেছি  |   তাঁদেরই একজনের কথা লিখলাম - আমার এই বন্ধু কলেজ জীবনে হাঁড়কিপটে হিসাবে বন্ধুমহলে বিশেষ প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলো  |   সুন্দর আলোকিত একটা   পিতৃদত্ত নাম ওর ছিলো বটে , কিন্তু আমরা ওর নাম দিয়েছিলাম ‘কিচোবা’  |  আরেঃ না না , এটা কোনো চীনা-জাপানী শব্দ নয় , ‘কিচোবা’ আসলে কিছু অর্থপূর্ণ বাংলা শব্দের আদ্যাক...

নরেন্দ্রপুরের স্মৃতিকথা (Memoirs of RKM Narendrapur) : পর্ব ৪ : হিন্দি-শিক্ষার ধাক্কা: “উল্লু কা পাঠ্ঠা” এবং “শয়তানী মুলো”

“ ভাইসাব আপলোগ হিন্দি মে বোলতা কো বোলতা নেহি বোলতা তো কেয়া বোলতা?”- ছোটবেলায় এই চুটকিটা শোনেনি এরকম বাঙালী খুঁজে পাওয়া যাবে না | এটা বাঙালির হিন্দি-বচন কে ব্যঙ্গ করেই বানানো | পরবর্তীকালে যারা কর্মসূত্রে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে যান, তাদের কমবেশি সবাইকেই এই বিষয়ে খানিকটা ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ সহ্য করতে হয় – যার মধ্যে এটা প্রায় সর্বজনীন: “আপ বাঙালী লোগ তো সবকুছ খাতে হ্যায় – চাওয়াল ভি, পানি ভি অউর সিগারেট ভি… . .!!!” | বাঙালী জাতির এই বদনাম ঘোচানোর উদ্দেশ্যেই বোধহয়  নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে আমাদের তৃতীয়-ভাষা হিসাবে হিন্দি পড়বার একটা ব্যবস্থা ছিল এবং অন্য অপশন সংস্কৃত-এর তুলনায় এটি অধিকতর জনপ্রিয় ছিল | আমাদের সময়ে স্কুলে দু’জন হিন্দী শিক্ষক ছিলেন – শ্রী রামকুমার উপাধ্যায় এবং শ্রী রামলক্ষ্মন খান | প্রথম গল্প:- সেদিন ছিল আমাদের প্রথম হিন্দী ক্লাস (ক্লাস সিক্স, ১৯৯৭-৯৮ সাল), রামকুমারদা ক্লাস নিচ্ছেন | ভদ্রলোক সজ্জন এবং গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ ছিলেন | সেদিন সবে আমাদের অক্ষর পরিচয় হল | অ-আ-ক-খ শেখানোর পর স্যার প্রশ্ন করলেন যে আমরা বুঝেছি কিনা এবং আমাদের কোনো জিজ্ঞাস্য আছে কিনা | ...

নরেন্দ্রপুরের স্মৃতিকথা (Memoirs of RKM Narendrapur) : পর্ব ৩ - ঘন্টা, আলু এবং ব্রহ্ম

নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে ছাত্রদের দৈনন্দিন আবাসিক জীবনকে নিখুঁতভাবে তুলে ধরেছে এই ছোট্ট ছড়াটা - “ নরেন্দ্রপুরে সময় ঘন্টাময় , খাদ্য আলুময় , চিন্তা ব্রহ্মময়  | ” অনেকদিন আগে শোনা এই ছড়ার রচয়িতার নাম আমার জানা নেই , কিন্তু ছড়াটা এতটাই প্রাসঙ্গিক যে এটা আমার মনের মধ্যে যেন গেঁথে গেছে  | ************************************************************ প্রথম ভাগ : ঘন্টা বাস্তবিকই আমাদের আবাসিক জীবন ছিল ঘন্টা-নিয়ন্ত্রিত  |   ভোর পাঁচটায় rising bell শুনে ঘুম ভাঙতো , তারপর ঘন্টার তালে তালে সেই যে লেজ তুলে দৌড় শুরু হত , সেটা থামত রাত সাড়ে দশটা নাগাদ , ‘lights out’ এর ঘন্টাধ্বনি শুনে  |   চার বেলা ডাইনিং হলে খেতে যাওয়ার ঘন্টা , প্রার্থনা কক্ষে যাবার ঘন্টা , স্কুলে যাবার ঘন্টা , হোস্টেলে পড়া শুরু করার ঘন্টা , খেলতে যাবার ঘন্টা , রাত্রে শুতে যাবার ঘন্টা – আমাদের প্রতিটা কাজ ছিল ঘন্টা-নিয়ন্ত্রিত  | প্রতিদিন এই সময়ে-অসময়ে ঘন্টা বাজানোর জন্য প্রত্যেক ভবনে (হস্টেলে) প্রতি মাসে দু’জন ছাত্রকে নিয়োগ করা হতো , এদের বলা হতো ‘...